সুরের মুর্চ্ছনায় শ্রোতাদের মুগ্ধ করলেন শফি মন্ডল ও লিমা পাগলী

স্টাফ রিপোর্টার : চাটমোহরে গানে গানে দর্শকদের মাতিয়ে গেলেন প্রখ্যাত বাউল শিল্পী শফি মন্ডল ও বিচ্ছেদ গানের অন্যতম শিল্পী লিমা পাগলী। চাটমোহর ব্যবসায়ী সমিতির আয়োজনে রোববার রাতে চাটমোহর বালুচর খেলার মাঠে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় তারা গান পরিবেশন করেন। তারা একের পর এক বাউল গান আর বিচ্ছেদের গান দিয়ে সুরের মুর্ছনায় ভাসিয়ে দেন দর্শকদের। রাত যতই গভীর হয় ততই তাদের গান যেন নতুন সুরে গেয়ে ওঠে। শুক্রবার সন্ধ্যায় চাটমোহর ব্যবসায়ী সমিতির ১৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক সাংসদ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম। আর রোববার সন্ধ্যায় ছিল সংবর্ধণা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন জিয়া সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি হাসানুল ইসলাম রাজা। চাটমোহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোখলেছুর রহমান বিদ্যুৎ এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ জিয়ারুল হক সিন্টুর সঞ্চালনায় সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় সংবর্ধণা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুরুতে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাটমোহরের গুণীজনদের সংবর্ধণা দেওয়া হয়। তারপর ১৯৯৮ সাল থেকে সমিতির সকল কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ ও উপদেষ্টা মন্ডলীকে সংবর্ধণা দেওয়া হয়। সংবর্ধণা পর্বে শিক্ষায় অসামান্য অবদান রাখায় চাটমোহর আরসিএন অ্যান্ড বিএসএন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ফসি উদ্দিন, সংস্কৃতিতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির রাজশাহী বিভাগীয় সদস্য নাট্যজন আসাদুজ্জামান দুলাল, ক্রীড়ায় পরপর চারবার বাংলাদেশের জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন কাজী আব্দুস সোয়াদ এবং শিল্পে ডি এ জয়েন উদ্দিন স্কুলের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জাতীয় শিশু কিশোর প্রতিযোগিতায় ২০২৩ সালে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত তমজিৎ কর্মকারকে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। সংবর্ধণা অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গানের সুরে সুরে নৃত্য পরিবেশন করে দর্শকদের মন কেড়ে নেয় চিত্রগৃহ চাটমোহর ও পাবনার সোনার বাংলা মা একাডেমীর শিল্পীবৃন্দ। চ্যানেল আই সেরা কন্ঠের সেরা দশের শিল্পী শান্তনা কয়েকটি গান গেয়ে দর্শকদের নাচিয়ে তোলেন। এরপর আরটিভি বাংলার গায়েন চ্যাম্পিয়ন রাসেল মৃধা কয়েকটি গান পরিবেশন করে সেই পালে হাওয়া দেন। তারপর মঞ্চে আসেন সেরা বিচ্ছেদ শিল্পী লিমা পাগলী। একে একে পরিবেশন করেন তার প্রিয় প্রেম বিরহ আর বিচ্ছেদের গান। তার কণ্ঠের সুরে বুদ হয়ে যায় দর্শক। ভুল করে আমি একজন ভুল মানুষের সঙ্গে। শ্যাম তুমি লীলা বোঝো মন বোঝো না। এমন আরো কিছু গানে বিমোহিত হয় দর্শকরা। লিমার পর শফি মন্ডল যখন মঞ্চে আসেন তখন রাত অর্ধেক পার হয়েছে অনেক আগেই। দর্শকরাও বাড়ি যাবার পথ ধরেছে অনেকে। তখন শফি মন্ডল দরাজ কণ্ঠে গেয়ে ওঠেন, তুমি দাতার শিরোমনি, আমি তত অভাগীনি। এমন সাধের জনম আর হবে না বারে বারে আর আসা হবে না। মন আমার আবোল তাবোল ভাবো। নদী ভরা ঢেউ, বোঝোনা তো কেউ। এমন গানে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যান উপস্থিত দর্শক। এরপর শফি মন্ডলের সাথে লিমা একসাথে গেয়ে ওঠেন, এসব দেখি কানার হাটবাজার। তোমার দিল কি দয়া হয় না। দে দে পাল তুলে দে, মাঝি হেলা করিসা, ছেড়ে দে নৌকা আমি যাবো মদিনা। এভাবে একের পর এক গানের সুরে দর্শক মাতিয়ে যান তারা।