এমপি নাদিরা ইয়াসমিন জলির পিতা
মোশারফ হোসেন কালুর মৃত্যুবার্ষিক আজ
স্টাফ রিপোর্টার : পাবনা- সিরাজগঞ্জ সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি নাদিরা ইয়াসমিন জলির পিতা মোশারফ হোসেন কালুর আজ দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিক। ২০২১ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরন করেন। ১৯৩২ সালে পাবনা পৌরসভার লাইব্রেরি বাজার এক স্বনামধন্য পরিবারে তার জন্ম। এক সময়ে এই শহরের বিশিষ্টজন পিতা মগরের আলী মুন্সির ২য় স্ত্রীর ১ম সন্তান তিনি। ৬২,৬৪,৬৬,৬৯ গণঅভ্যুথান, ৭০ এর নির্বাচনে তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত হয়েছেন। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন পাবনার (অনাবীর) আনসার ব্যাটালিয়ান কমান্ডার। ১৯৬৯ সালে পাবনা রাইফেল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও পরবর্তিতে এই ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার সংগ্রামের ভাষণের পর তিনি গোপনে প্রায় ৫০ জন যুবকদের নিয়ে কৃষ্ণপুর গালর্স স্কুলের কমান্ডো ট্রেনিং করানো শুরু করেন। এই ট্রেনিং কার্যক্রম ১০ মার্চ থেকে ২১ শে মার্চ পর্যন্ত পরিচালনা করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিনি জেলা প্রশাসক নুরুল কাদেরের নির্দেশে দিনাজপুর রাইফেলস ক্লাবে যান সেখানে থেকে ৩০ হাজার রাউন্ড টুটু রোর রাইফেলের গুলি নিয়ে খুব সাবধানে পাবনায় নিয়ে আসেন। পঁচিশে মার্চ প্রায় ১৫০ জন পাকসেনা বিসিক শিল্পনগরীতে আসে এবং কারফিউ ঘোষণা করেন। তারা কিছু সংখ্যক লোকের মারফত আমিন উদ্দিন, অমুলেন্দু দাক্ষী ডাক্তার, সাঈদ তালুকদারসহ আরো অনেককেই ধরে নিয়ে যায়। ২৮ শে মার্চ সকাল আটটা সাড়ে আটটার সময় তৎকালীন এ.এস.পি আব্দুল গাফফার তাকে পুলিশ লাইনে ডেকে পাঠান। তিনি উপস্থিত হলে রাইফেলের ট্রেনিং জানা ছেলে কয়জন তার কাছে আছেন তা জানতে চান তিনি। তখন কাছে ৫০ জনের মতো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছেলে রয়েছে বলে জানান মোশারফ হোসেন কালু। পাকসেনাদের প্রতিরোধের জন্য তার কাছে সংবাদ দেন মকবুল হোসেন সন্টু। পাকসেনাদের প্রতিরোধের জন্য সংগ্রহ করা ৪৯টি রাইফেল ও সেই দিনাজপুর হতে নিয়ে আসা গুলি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসারদের দেয়া হয়। ২ মার্চ প্রথম পর্যায়ে পাকসেনারা পাবনা পুলিশ লাইন্স আক্রমণ করলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও পুলিশের প্রতিরোধের মুখে পড়ে সম্মুখীন হয় এবং পাকসেনারা পরাজিত হয়। পাবনা শহরের ময়লা গাড়ি নামক স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকসেনারা ওয়াপদা ক্যাম্পে ২৬ দিন নির্যাতন চালায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন কালুর ওপরে। ব্যাওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে শরীর ক্ষত-বিক্ষত করেছেন শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধাদের নানামূখী সহযোগিতা ও তথ্য জানানোর জন্য। ২৬ দিন এভাবে নির্যাতনের পর তথ্য না পেয়ে তাকে বাড়ির সামনে ফেলে দিয়ে যায় এবং এভাবে তিনি মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পান। ১৯৪৭ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বপ্রথম তাকে শ্রেষ্ঠ কৃষক ও শ্রেষ্ঠ সমবায়ী হিসাবে ধারাবাহিকভাবে দ্ুিট রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১৯৯৮ সালে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি পাবনা জেলা শাখা গঠন করে তিনি হয়েছিলেন সেই কমিটির একজন সদস্য। তিনি ২০০১ সালে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতি পাঠাগার আটুয়া মোমেনা বাদ সড়ক ও জনপদ উপবিভাগ এর সামনে একটি ছোট্ট কামড়ায় প্রতিষ্ঠা করা হয়, নিজ এলাকাতে এই মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতি পাঠাগার গঠনের সাথে তিনি ছিলেন নিবীড়ভাবে সম্পৃক্ত। তিনি পাবনা- সিরাজগঞ্জ সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি নাদিরা ইয়াসমিন জলির পিতা। মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে তার রুহের মাগফেরাত কামনায় সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করা হয়েছে।
সর্বশেষ
- ঐতিহ্যবাহী পাবনা প্রেসক্লাবের ৬৪ বছর পূর্তি আজ
- আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত বেড়ায়
- ঈশ^রদীতে মেয়াদোত্তীর্ণ চা পাতা সংরক্ষণ করায় শাওন কোম্পানিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা
- নারী বিষয়ক সংষ্কার কমিশনের ৬ দফা প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে হেফাজত ইসলামের বিক্ষোভ
- দেশপ্রেমিকরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন না : জামায়াত আমির
- বিচার বিভাগের আয়োজনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদ্যাপিত
- স্কয়ারে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস পালিত